story

 

             ~করোনাকালে কৈলাসে~

                               

ওমা দেখোনা, বোন আমায় বিরক্ত করছে" লক্ষ্মী ফোঁপাতে ফোঁপাতে ঘরে ঢুকলো। মা দুর্গা তখন তার ‘সবেধন নীলমণি' ফোনটা হাতে নিয়ে নোটিফিকেশনগুলো চেক করছিলেন । কাজে ব্যাঘাত ঘটায় ভ্রূ কুঁচকে মেয়ের দিকে তাকিয়ে একটু ঝাঁঝের সাথেই বলে উঠলেন ,"তোরা কি আমায় একটু শান্তিতে থাকতে দিবিনা? সারাদিন ধরে রান্নাবান্না করে যেই একটু সোফায় গা এলিয়ে বসলাম অমনি তোদের চেল্লামিল্লি শুরু ! জলদি বল কি হয়েছে ?”

-       -  "মা, সরু বলল এবার আর মেকআপ কিট নিতে হবেনা,মাস্কে মুখ ঢাকা থাকবে তাই...”

কথাটা শেষ হবার আগেই মা বলে উঠলেন “ঠিকই তো বলেছে ও।এর জন্য অমন গলা ছেড়ে ষাঁড়ের মতন চিৎকার করার কি আছে?"

শিববাবাজি তার বাহনের নামে কিচ্ছুটি বললে মারাত্মক রেগে যান । ওনার সবদিকে দৃষ্টি ,অতএব এ বিষয়টাও নজর এড়ালোনা । বেসিনের সামনের আয়নায় দাড়ি কামাতে কামাতে বৌয়ের উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন ,"অ্যাই, কতবার বলেছি তোমায় জন্তুদের সাথে তুলনা টানার ঐ ব্যাড হ্যাবিটটা ছাড়ো। আজ ষাঁড় বলছ, কাল না জানি আর কি বলবে ! মর্ত্যের থেকে সব বাজে জিনিসগুলোর আমদানি করেছো তোমরা এই কৈলাসে !"

মা দুর্গাও কম যান না , মুখ ঝামটা দিয়ে বলে ওঠেন , "আমাকে বলছ বলো , বাপের বাড়িকে এর মধ্যে টানার কি আছে? বাবার টাকাতেই তো এ সংসার চলে। এত গরম দেখাও কাকে? নিজে তো দিনরাত ক্লাবে আড্ডা মারো আর ঐসব হাবিজাবি খেয়ে ... থাক বাচ্চাদের সামনে তোমার গুণপনা নাই বা করলাম!”

ধ্যাতানি খেয়ে চুপসে যান শিবঠাকুর। পার্বতী ভুল তো কিছু বলেনি। কাঠবেকারকে সবাই এরমকরেই কথা শুনিয়ে দেয়। এখন তিনি ভাবেন , বেশ তো ছিলেন ব্যাচেলর , কী ভূত চাপলো মাথায় যে বিয়ে করতে গেলেন ! এইজন্যই বলে পুরুষ দুই প্রকার – জীবিত আর বিবাহিত। ধুরর... বলে শেভিং ক্রিম ধুয়ে বাথরুমের দরজা সশব্দে বন্ধ করে ভিতরে ঢুকে যান । এক্কেবারে চান করেই বেরোবেন। বৌয়ের অর্ডার অমান্য সাধ্যি নেই তার। আজ দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে সদলবলে যাবেন কৈলাসের ঝাঁ-চকচকে শপিং মলে! প্রতিবার মর্ত্যে যাওয়ার আগে বৌ বাচ্চাদের নিয়ে বাজার করতে যাওয়াটা তার ডিউটির মধ্যে পরে,কিন্তু একাজ করতে তার একদম ভালো লাগেনা। পয়সার অপচয় মনে হয়। নন্দী আর ভৃঙ্গী গাড়ি করে তাদের নিয়ে যায়, ফাইফরমাশ খেটে দেয়। তাও তো ওদের কোনও কাজ আছে কিন্তু শিবঠাকুর?তিনি বোকার মতন ট্রায়ালরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছেলেমেয়েদের জন্য লাইন রাখেন কিম্বা কাউন্টারের ক্রেডিট ডেবিটের হ্যাপা সামলান। তিনি জানেন বাকি দেবদেবীরা মহেশ্বরের এ দুর্দশা দেখে আড়ালে হাসাহাসি করে কিন্তু কি আর করা যাবে! ভাবতে ভাবতে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন মহাদেব।

এদিকে লক্ষ্মীরানি বাবা মায়ের কথা কাটাকাটির মাঝে নিজের কথার খেই হারিয়ে ফেলে দাঁড়িয়ে ছিল। বাবা চলে যেতেই আবার সেই নাকি কান্না জুড়ে বলে উঠল “ অ মা... তুমি শুনছই না আমার কথাটা,সরু আর কি বলেছে জানো?”

রাগে গজগজ করতে করতে দুর্গাদেবী বলে উঠলেন,” ধানাইপানাই না করে বলতো বাপু,কি বলেছে?”

“বলেছি যে দিদিকে বিনা মেকআপে ঠিক ওর প্যাঁচাটার মতন লাগবে!” বলে হি হি করে হাসতে হাসতে সরস্বতী কিন্ডেলের ট্যাব হাতে ঢুকল ঘরে। মেয়ের কথা শুনে মা ফিক করে হাসতে গিয়েও সামলে নিয়ে মাতৃসুলভ গাম্ভীর্য বজায় রেখে বললেন,” এসব আবার কি কথা? দিদিকে এমনি করে কেউ বলে?”

মা তার পক্ষ সমর্থন করায় লক্ষ্মী একটু খুশি হয়ে সরস্বতীর দিকে মুখ ভেংচে দিল।

“কিন্তু মা, জাস্ট থিংক,লকডাউনের জন্য বিউটি পার্লার বন্ধ।ফলত দিদির স্পা, পেডিকিওর,ম্যানিকিওর কিছুই হচ্ছেনা,এ অবস্থায় ওকে দেখতে কেমন লাগবে বলতো?মাস্ক পরলে সেসব কিছুই বোঝা যাবেনা তাই আমি ওকে সাজেশন দিচ্ছিলাম আর কি!” সরস্বতী স্বপক্ষে যুক্তি দেয়।

লক্ষ্মী রেগে ফায়ার, “কি বলতে চাস তুই আমায় দেখতে খারাপ? তুই নিজে কি করিস বলে দেব মা কে?” তারপর মার দিকে ঘুরে বলে উঠল, "ও নিজের সেলফিতে ফিল্টার মেরে ফেবু আর ইনস্টায় পোস্ট করে।ইভেন সেদিন তো তোমার আদরের জামাই অবধি ওর ছবির নিজে কমেন্ট করেছিল যে কিনা জীবনে আমার পোস্টে কষ্ট করে একটা লাইকও দেয়না!"

“ নারায়ণজিজুর মনে হয়েছে করেছে কমেন্ট ,আমি কি জানি? দিদি তুই এতো ওভার পসেজিভ না কি বলবো!আর শুধু আমি কেন আমাদের ভাই ‘কেতো’ও ফটো এডিট করে ডিপিতে দেয়পড়াশোনা করতে গিয়ে রূপচর্চা করার সময় পাইনা তাই এ পন্থা! বাজে কাজে নষ্ট করার মতন টাইম আমার নেই রে !” সরস্বতী মুখ বেঁকিয়ে শুনিয়ে দেয়

দেখলে তো মা আবার আমায় ঠুকল!” লক্ষ্মী প্রায় কেঁদেই ফেলে, এই দেখে মা হুংকার ছেড়ে বলে ওঠেন, “ তোদের এই কলতলার ঝগড়া থামা এবার। এত্ত বড় হয়ে গেছিস তাও এমন করিস, লজ্জা করেনা?তোদের দেখে ভাইয়েরা কি শিখবে?”

“ মুঝে বুকারা অউর ম্যায় ইউ চালা আয়া” চুলে স্পাইক দিতে দিতে কার্তিক এসে হাজির। বরাবরই সে ভীষণ শৌখিন ( বলিউডের সিনেমার পোকা !), বাড়িতে থাকলেও সেজেগুজে ফুলবাবুটি হয়ে ঘুরে বেড়ায়,বাইরে বেরোলে তো কথাই নেই ! স্বর্গের অনেক দেবীই যে তার উপর ক্রাশ খেয়ে বসে আছে একথা সে বিলক্ষণ জানে কিন্তু তার কাউকেই তেমন মনে ধরেনা। “সিঙ্গেল হয়ে মিঙ্গেল” করতেই সে বেশি ভালোবাসে।

কার্তিককে দেখে মা বলে উঠলো, “ তুই যখন এসে পড়লি ভালোই হল,গনশাকেও ডেকে আন বরং আজ ভাবছি খাওয়া দাওয়া মিটিয়ে একবার বাজারে যাবো, সব কেনাকাটা তো একদিনে হবেনা, ভাগে ভাগে করবো। তোরা কি কি কিনবি তার একটা লিস্ট বানিয়ে ফেল শিগগির!"

“ আরে মা আমরা যেসব ব্র্যান্ডেড জামাকাপড় পরি সেগুলো শপিং মল ছাড়া পাওয়া যায়না, আর লকডাউনের জেরে সেটা যে বন্ধ তুমি ভুলে গেলে?” কার্তিক বলে ওঠে।

মা দুর্গা জিভ কেটে বলেন ,"আরে তাই তো,দেখ দিকিনি মাথা থেকে একদম বেরিয়ে গেছে। তোর বাবাকে তড়িঘড়ি স্নানে পাঠিয়ে দিলাম , এখন প্ল্যান চেঞ্জ করলে যদি উনি রেগে যান? ওনার রাগ তো তোরা জানিস।"

“ আমার মনে হয়না বাবা রাগ করবে,এমনিও শপিং যাওয়াতে বাবার ভীষণ অনীহা আমাদের মুখ চেয়ে কিছু বলতে পারেনা তাই যায়” বিজ্ঞের মতন মাথা নেড়ে বলে লক্ষ্মী।

“ থাক আর বাবাকে নিয়ে আহ্লাদীপনা করতে হবেনা,কত্ত তোমরা বাবার কথা ভাবো জানা আছে।“ মা এবার তোপ দাগেন “ সেদিন তোদের বাবা হাঁটুর ব্যাথায় শুয়ে কাতরাচ্ছিল কেউ তার খবর নিয়েছিলিস?আজকালকার ছেলেমেয়ে তোরা, বাপ মায়ের কথা ভাবার টাইম আছে তোদের?সব তো নিজের দুনিয়াতেই মশগুল!...” ইত্যাদি ইত্যাদি বলে চলেন তিনি।

হঠাৎ কিসের আওয়াজ পেয়ে কথা থেমে যায়। রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে দেখেন সেখান থেকে বেরোচ্ছে গণেশ চুপি চুপি। মার চোখে নজর আটকাতেই সে ধরা পরে যাওয়া চোরের মতন হেসে ফেলে।

সরস্বতী কেসটা ধরতে পেরে হাসতে হাসতে বলে ওঠে,” আবার চুরি করে কি খেলি রে পেটুক?”

“ নাহ আমি ...মানে ... দেখছিলাম... " তোতলায় সে।

মা জানেন তার এই পুত্রটি খেতে খুব ভালবাসে।মাঝে মাঝে ফ্রিজ থেকে এটা সেটা নিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নেয়। মা সব বুঝতে পারেন,কিন্তু কিছু বলেন না। আজ সবার ব্যস্ত থাকার সুযোগ নিয়েই সে যে রান্নাঘরে খাবার চাখতে ঢুকেছিল সেটা বুঝতে তার আর বাকি থাকেনা।

“ আচ্ছা,ঠিক আছে।তুই এদিকে আয়” মা গণেশকে ডেকে পাশে বসায়। ওর মুখে এখনও মিষ্টির রস লেগে আছে । তা নজরে পড়তেই এবার কার্তিক ওর পিছনে লাগা আরম্ভ করে দেয়,” আবার তুই ডায়েট ভেঙ্গে রসগোল্লা খেলি? তুই যে সেদিন আমায় বললি জিমে গিয়ে অসুরকাকুর মতন সিক্সপ্যাক বানাবি,এরম করলে 'ভুঁড়িপ্যাক' ছাড়া আর কিছুই হবেনা গনু!!”

গণেশ ইয়ার্কিটা গায়ে মাখলনা বিশেষ,'একটু হেলদি' বলে ওকে সবাই খ্যাপায় ও জানে,বলেওছে অনেকবার দিদি দাদাকে যে “ বডি শেমিং” করাটা ঠিক নয়,কে কার কথা শোনে? ছোট বলে ওকে পাত্তা দেয়না কেউ ।

  সরস্বতী অনেকক্ষণ ধরে কি যেন একটা ভাবছিল এবার স্কোপ পেয়ে কথাটা পেড়ে ফেলল,"মা, এবার কি করে পুজো হবে বলোতো? সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে মানুষ কি করে পুজোতে আনন্দ করবে?”

লক্ষ্মীও চিন্তিত মুখে বলে ওঠে,"হ্যাঁ রে ঠিক বলেছিস,খবরে শুনলাম কি খারাপ অবস্থা মর্ত্যের! করোনার মধ্যে দাদুর বাড়ি যাওয়ার মজাই এবার মাটি!”

“তবে কি আমরা দাদানের বাড়ি যাবনা মা?” গণেশ মাকে জিজ্ঞেস করে।

“ যাব অবশ্যই যাব,না গেলে যে মানুষেরা কষ্ট পাবে।এমনিও কত দুঃখের মধ্যে আছে ওরা বলতো?আমরা গেলে তাও ওরা কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবে!”মা আশ্বাস দিয়েই বলে ওঠেন- “ তবে আমরা নিয়ম মেনেই যাব। এবার মহালয়ার পর একমাসের গ্যাপে পুজো,পঞ্জিকাতে দেখলাম।সুতরাং আমরা দাদুর বাড়িতে যাওয়ার আগে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে কাটাব। দেব দেবী বলে করোনা আমাদের রেহাই দেবে এমন ভাবাটা ভুল!''

“ বাপ রে, চৌদ্দো দিন? কি করে বন্দিদশায় কাটবে ভেবেই কেমন একটা যেন লাগছে!” কার্তিক হতাশগলায় জানাল

“ তবে ভাবতো মর্ত্যবাসী যারা মাসের পর মাস এরমভাবে কাটাচ্ছে তাদের কি অবস্থা?“ লক্ষ্মী মতামত দেয়।

“ আর তাছাড়া কৈলাসের চেয়ে ওখানে নেটের কানেক্টিভিটি ভালো সো তুই ঐ কদিন আরামসে পাবজি খেলে আর ওয়েব সিরিজ দেখে কাটিয়ে দিতে পারবি!” সরস্বতী আইডিয়া দেয়।

“ তবে মা আমরা কি মর্ত্যে গিয়ে শুধুই পুজো নেবো? দেবদেবী বলে কি আমাদের কোনও কর্তব্য নেই?মানুষের দুরবস্থার সময় আমরা কি তাদের পাশে দাঁড়াব না?” ছোট্ট গণেশের কথায় সবাই তার দিকে তাকায়। মা জিজ্ঞেস করে সে কি করতে চায়,উত্তরে সে জানায়,” এবার আম্ফান ঝড়ে আর করোনার প্রকোপে বাংলার মানুষের অবস্থা খুবই শোচনীয়,আমি ভেবেছি আমরা যদি ছদ্মবেশ নিয়ে মানুষের সাহায্য করতে পারি যেমন ধরো দরকারি জিনিসপত্র দিয়ে তাহলে তাদের উপকার হয়। “

ভাইয়ের কথায় সায় দিয়ে সরস্বতী বলে," হ্যাঁ ঠিক বলেছিস, ঝড়ে শুনলাম অনেকের বই খাতা পত্র নষ্ট হয়ে গেছে,পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে,অনেক ছাত্রছাত্রীর কাছেই তো স্মার্টফোন বা নেট এদুটোর কোনওটাই নেই, আমি যদি এদিকটা সামলাই... উই মাস্ট হেল্প দেম।"

কার্তিক বলল, “ মা এবার ভাবছি জামাকাপড় কিনবোনা,আমাদের অনেক জামা আছে, ইনফ্যাক্ট বাড়িতে এমন অনেক জিনিস আছে যেগুলো আমরা সচরাচর ব্যবহার করিনা।অন্যদের কাজে সেগুলো লাগতেই পারে।সেইসব বিলি করার ব্যাবস্থা করলে কিরম হয়?”

মা দুর্গা খুশি হয়ে বললেন," খুব ভালো প্ল্যান, তবে শুধু জামাজুতোই নয়,বিশ্বকর্মাকে বলে মাস্কও তৈরি করাতে হবে,তার সাথে স্যানিটাইজারও,নিজেদের জন্য প্লাস মানুষের মধ্যে  বিলি করার জন্য।"

“ মা আমি ভাবছি ফুডিং এর জন্য যদি কিছু করা যায়,রোজগারপাতি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে তো খেতে পাচ্ছেনা দুবেলা পেট ভরে

লক্ষ্মীর কথা শুনে মা হেসে বলেন," করোনার আগেও বহু মানুষ অনাহারে মারা যেত, এখন সেই সমস্যাটা আরও প্রকট হয়ে উঠছে বলেই মর্ত্যে চাল ডাল বিতরণের হিড়িক পরে গেছে। তবে তোরা যা করতে চাস মানুষের ভালোর জন্য করিস।আমার এতে পূর্ণ মত আছে।"

গনশার বুদ্ধির তারিফ করে মা তার গাল টিপে দেন। সরস্বতী মার দিকে তাকিয়ে বলে," মা সবেরই মীমাংসা হল তবে একটা বিষয়ে আমার খটকা এখনও দূর হচ্ছেনা। প্রতিবার এই সময় নাগাদ মানে মর্ত্যে যাওয়ার আগে অসুরকাকু যেখানেই থাকুক না কেন ঠিক প্রেজেন্ট হয়ে যায়। এবার কই আসছে না তো!”

মা দুর্গাও মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে বলে," এইটা তো ঠিক বলেছিস!সেদিন আমি ওকে টেক্সট করেছিলাম ও কোনও রিপ্লাই দিলো না!”

কার্তিকও সায় দেয়,"ডাল মে জরুর কুছ কালা হ্যায়!”

সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ। এমন সময় শিব ঠাকুর বাথরুম থেকে স্নান সেরে বেরিয়ে এলেন। সেখান থেকে উনি পুরো আলোচনাই শুনতে পেয়েছেন। (মনে মনে খুশিও হয়েছেন এটা জেনে যে এবার শপিং এ যেতে হচ্ছেনা!কি বোরিং মাইরি!)

 অগত্যা শ্যাম্পু করা জটা মুছতে মুছতে কেতা নিয়ে বললেন,"আরে মহিষাসুর যে রূপ বদলাতে পারে সেটা তোমরা ভুল মেরে গেলে নাকি? ঐ তো করোনাসুর!”

সবাই অবাক চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে থাকে, সত্যিই তো এটা কারুর মাথায় আসেনি। দুর্গা এবার একগাল হেসে বলে ওঠে," অ আমাদের সব কথা আড়ি পেতে শোনা হয়েছে বুঝি? তবে যাই বলো বাপু কখনো কখনো তোমার ব্রেন এমন শার্প চলে যে তারিফ করতেই হয়...যাইহোক,এবার মর্ত্যে গিয়ে মহিষাসুর থুড়ি করোনাসুরমর্দিনী করতেই হবেতার জন্য প্ল্যানমাফিক এগোতে হবে আমাদের কেমন ?”

শিব বউয়ের খোঁটাটা হজম করে নিয়েই বললেন,"হ্যাঁ সে মাষ্টারপ্ল্যান আমি,ব্রহ্মা আর বিষ্ণু মিলে সেট করে দেবো,চাপ নিয়োনা।“ তারপর ছেলেমেয়েদের দিকে ফিরে বললেন,”তোরা তো দাদুর বাড়ি গিয়ে আমায় টোটালি ভুলে যাস এবার যেন সেকাজ  করিসনি,একা একা থাকতে ভালো লাগেনা বুঝিসই তো। সময় করে এই বুড়ো বাপটার সাথে একটু ভিডিও কলে কথা বলে নিস!”

“ হ্যাঁ বাবা......করবো” আদুরে গলায় বলে ওঠে চারজন ।

দুর্গার দিকে চোখ ফিরিয়ে শিবঠাকুর দেখেন, তিনি হাসছেন।ঠিক যেমন বিয়ের আগে হাসতো পার্বতী ঠিক সেরকম।বিবাহিত জীবনকে তিনি যতটা খারাপ প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছিলেন একটু আগে,অতটাও নয় এখন মনে হচ্ছে।আরে বাবা,ঠাকুর দেবতাদেরও রাগ মান অভিমান হয়, ভুললে চলবে কেন?😉

 

Suleman gave a message from the painting that the maa durga will kill the  corona virus

 

                                     *********************

 

কবিতা

Read Bengali Poem বন্ধুআমাদের কবিতা 

যদি ফুল হয়ে ভালোবাসি তোকে
যদি তোর কাছে জমা রাখি মন
যদি তোর হাতে হাত রেখে
পথ হারাই দুজনেতে অকারণ।

যদি তোর বিষাদের দাগে
নেমে আসি নোনা জল হয়ে,
ক্লান্তির বালিশেতে মাথা রেখে
বিলি কাটি আঙ্গুল দিয়ে ছুঁয়ে!

যদি তোর কাঁধে মাথা রেখে
মুছিয়ে দিয়ে অভিমান ক্ষত
সারারাত আলো দিয়ে ধুয়ে
জেগে থাকি তারাটির মতো।



কৃষ্ণকলিরা বলছে.........

Free Black Lives Matter Posters | PosterMyWall



জর্জ,
শুধু তুমি নও
আমরাও বহুদিন ধরে শ্বাস নিতে পারছিনা!
তুমি বলতে পেরেছ
আমরা তাও পারিনা
তোমার শব্দত্রয়ী সবাই শুনতে পেয়েছে
আমাদের কথা কারুর কানেও যায়না,
রবিবারের চৌখুপিতে তাই
"ফরসা,তন্বী" সুন্দরীদের খোঁজ চলে নিরন্তর...
আর প্রসাধনের বিজ্ঞাপনে
আমাদের ''মুখ ঢেকে যায়" !




অংশত কাব্যিক

Plutchik-wheel.svg



           অবশেষে অবসাদ             

 

 

১)

রাত বাড়লে বাতাসের শীৎকার শুনি-

মনে হয় কেউ নয়,আমিই তো খুনি!

 

২)

কান্না গিলতে গিলতে

ক্ষয়ে গেছে সুখের স্বাদকোরকগুলো,

নিজেকে চেনাতে গিয়ে

পাইনা আয়না দেখার ফুরসত ।

এখন বুঝি কামনারা

খোলস পাল্টাতে জানে,

শুধু আমিই বারবার

একা পড়ে যাই!    

 

 

 

 

 

 



অংশত কাব্যিক

Be Sexy - Eyelashes Drawing Cartoon Clipart (#996618) - PinClipart


             (১)

দিনের শেষের বালুকাবেলায়

তপ্ত মুক্তো-ঝিনুক খোলায়~

পারবে আমার শরীর জুড়ে

তোমার কলম বিদ্ধ করে

লিখতে তিন শব্দের কবিতা...

বলো কবি, পারবে?💔


                 (২)


না ছুঁয়েও যদি বলো ভালোবাসা যায়

পূর্ণতা পাইনা কেন শিরায় শিরায় ?❤